এস এ নয়ন, রাঙ্গুনিয়াঃ বাংলাদেশে প্রতিবছর জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঝরে পড়েন ১২ সহস্রাধিক নারী। শনাক্তের বাইরে থাকা এবং মৃত্যুবরণকারী অসংখ্য নারী ও তাদের স্বজনেরা জানতেও পারেন না এই ক্যানসারই অকালে কেড়ে নিয়েছে নিজের বা স্বজনের প্রাণ। নারীদের যত ধরনের ক্যানসার হয়, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ক্যানসার এটি। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে ৮০ শতাংশ নারীর শরীরে বাসা বাঁধে এই ক্যানসার। অল্প বয়সে বিয়ে ও সন্তান প্রসব, ঘন ঘন এবং অধিক সন্তান প্রসব, জন্মনিয়ন্ত্রণে ঝুঁকিপূর্ণ পদ্ধতিসহ বেশ কয়েকটি কারনে এই ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন নারীরা।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস নামক একটি ভাইরাস মূলত এই ক্যানসারের প্রধান কারণ। এ ধরনের ক্যানসার প্রতিরোধ একটি অন্যতম উপায় হলো টিকা। এই টিকা গ্রহণের মাধ্যমে ঝুঁকি ৮৫ শতাংশ প্রতিরোধ করা যায়। বিবাহিত জীবন শুরুর পূর্বে নারীদের জন্য টিকাটি অত্যন্ত কার্যকর। এ ছাড়া ডাক্তারের পরামর্শনুযায়ী অন্যান্য সময়েও এই টিকা নেওয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুন স্তন ক্যান্সার কেন হয়?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশে জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যানসারের টিকা সহজলভ্য। এছাড়া সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলিতে এই ক্যানসার ভায়াটেস্টের মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়। এই রোগ প্রতিরোধের টিকা শহর ও গ্রামাঞ্চলের প্রান্তিক পর্যায়ে প্রদানের জন্য সরকারি পর্যায়ের নিয়মিত কর্মসূচি চালু রয়েছে। সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিক ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে এই টিকা সহজেই গ্রহণ করতে পারেন নারীরা।
সম্প্রতি রাঙ্গুনিয়ার দক্ষিণ রাজানগর খোরশেদ তালুক সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিকে মহিলাদের বিনামূল্যে (জরায়ু মুখ ও স্তন ক্যান্সার শণাক্তের পরীক্ষা) ভায়াটেস্টের জন্য রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। ক্যাম্পটি পরিদর্শনে এসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জেলা সমন্বয়কারী কর্মকর্তা শাহরিয়ার আহমেদ চাটগাঁর সংবাদকে বলেন, ‘জরায়ু মুখ ও স্তন ক্যান্সাররোধ করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের উদ্যোগে প্রত্যেক ইউনিয়নে একটি করে ক্যাম্প তৈরী করে বিনামূল্যে পরীক্ষা করানো হচ্ছে। ৩০ থেকে ৬০ বছরের প্রত্যেক মহিলাদের এই পরীক্ষাটা করানো উচিত।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গুনিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক মো. ওয়াহিদ আলম, কমিউনিটি ক্লিনিক পরিচালক শ্রী মিল্টন চক্রবর্ত্তী ও স্বাস্থ্য সহকারী মো. রবিউল ইসলাম।
Leave a Reply